নামাজ শিক্ষা ও প্রয়োজনীয় সূরা-দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই অ্যাপটি ডাউনলোড করুন
ঈমানের পর নামাজই সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজকে মুসলিম ও অমুসলিমের মধ্যে পার্থক্যকারী আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘মুমিন ব্যক্তি ও মুশরিক-কাফিরের মধ্যে পার্থক্য নামাজ ত্যাগ।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৮২)
ইসলাম শুধু নামাজ আদায় নয়, বরং পরিবার ও সমাজে নামাজ প্রতিষ্ঠার নির্দেশও দিয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘আপনি আপনার পরিবারকে নামাজের নির্দেশ দিন এবং তার ওপর দৃঢ় থাকুন।’ (সুরা : ত্বহা, আয়াত : ১৩২)
যেভাবে নামাজে অভ্যস্ত করবেন
সন্তানকে নামাজে অভ্যস্ত করতে ইসলামী শরিয়তের কিছু নির্দেশনাও রয়েছে। যার কয়েকটি হলো—
১. নিজে নামাজে যত্নবান হওয়া : শিশুরা বড়দের দেখে শেখে। তাই সন্তানকে নামাজে অভ্যস্ত করার প্রথম শর্ত মা-বাবা ও অভিভাবক নিজেরা নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়া। নতুবা শুধু উপদেশ খুব বেশি ফলপ্রসূ হবে না। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা যা করো না, তোমরা তা কেন বলো? তোমরা যা করো না তোমাদের তা বলা আল্লাহর কাছে অতিশয় অসন্তোষজনক।’ (সুরা : সফ, আয়াত : ২-৩)
২. নামাজ পড়ার সময় সন্তানকে পাশে রাখা : মা-বাবা যখন নামাজ আদায় করবে সন্তানকে পাশে রাখবে। যেন সন্তান তার অনুকরণ করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজের সময় হাসান ও হুসাইন (রা.)-কে সঙ্গে রাখতেন বলে হাদিসের বর্ণনায় পাওয়া যায়। কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর কন্যা জয়নব ও আবুল আসের কন্যা উমামাকে কোলে নিয়ে নামাজ আদায় করেছিলেন। যখন তিনি সিজদা দিতেন তাকে নামিয়ে রাখতেন এবং দাঁড়ালে তাকে কোলে নিতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫১৬)
৩. নামাজি হওয়ার জন্য দোয়া করা : সন্তান যেন নামাজের প্রতি যত্নবান হয়—এ জন্য মা-বাবা দোয়া করবে। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে নামাজ কায়েমকারী করুন এবং আমার বংশধরদের মধ্যে থেকেও। হে আমার প্রতিপালক! আমার প্রার্থনা কবুল করুন।’ (সুরা : ইবরাহিম, আয়াত : ৪০)
৪. নামাজের জন্য পুরস্কার দেওয়া : সন্তান যেন নামাজের প্রতি যত্নবান হয়; এ জন্য তাকে পুরস্কার দেওয়া যেতে পারে। ফজরের নামাজের জন্য উঠলে, মসজিদে নামাজের জামাতে হাজির হলে, নামাজের জন্য প্রয়োজনীয় দোয়া, তাসবিহ ও সুরা মুখস্থ করলে তাকে পুরস্কৃত করা যেতে পারে। এ ধরনের উৎসাহমূলক পুরস্কার প্রদানে ইসলাম উৎসাহিত করে। সম্প্রতি তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশে এই পদ্ধতি অবলম্বন করে বেশ সাড়া পাওয়া গেছে।
৫. নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরা : সন্তানের সামনে নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরা প্রয়োজন। ইসলামী শরিয়তে নামাজের গুরুত্ব, নামাজ আদায়ের সুফল, নামাজ না পড়ার কুফল, শাস্তি ইত্যাদি বর্ণনা করা যেতে পারে। যেমন—রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘অন্ধকারে মসজিদে গমনকারীর জন্য কিয়ামতের দিন পূর্ণাঙ্গ আলো লাভের সুসংবাদ দাও।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৫৬১)
৬. নামাজ সম্পর্কিত ঘটনা শোনানো : নামাজ কিভাবে ফরজ হলো, রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজের প্রতি কতটা যত্নবান ছিলেন, সাহাবিরা যুদ্ধের ময়দানেও কিভাবে নামাজ আদায় করেছিলেন এবং বুজুর্গ আলেমরা নামাজের মাধ্যমে কিভাবে জীবনের বিভিন্ন সংকট মোকাবেলা করেছেন—সেসব ঘটনা শিশুদের শোনালে তারা নামাজে উৎসাহী হবে।
৭. নামাজের জন্য জবাবদিহি : সন্তান ঠিকমতো নামাজ পড়ছে কি না সেদিকেও মা-বাবাকে লক্ষ রাখতে হবে এবং নামাজে অলসতা করলে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি আমার খালা মায়মুনার কাছে রাতে অবস্থান করছিলাম। সন্ধ্যার পর রাসুলুল্লাহ (সা.) এসে জিজ্ঞেস করলেন, এই শিশু কি নামাজ পড়েছে? আমি বললাম, হ্যাঁ।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ১৩৫৬)
৮. প্রয়োজনে শাস্তি দেওয়া : মা-বাবা ১০ বছর বয়স পর্যন্ত সন্তানকে উৎসাহ ও মৃদু শাসনের মাধ্যমে নামাজে অভ্যস্ত করার চেষ্টা করবে। ১০ বছর পূর্ণ হওয়ার পরও তারা নামাজে অবহেলা করলে তাদের প্রতি কঠোর হবে এবং প্রয়োজনে শাস্তি দেবে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের সাত বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দাও। তাদের বয়স ১০ বছর হওয়ার পর নামাজের জন্য প্রহার করো এবং তাদের বিছানা পৃথক করে দাও।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪৯৫)
সন্তানকে নামাজে অভ্যস্ত করার পুরস্কার
যারা সন্তানকে নামাজের নির্দেশ দেবে এবং তাদের নামাজে অভ্যস্ত করার চেষ্টা করবে, তাদের জন্য সবচেয়ে বড় পুরস্কার আল্লাহর সন্তুষ্টি। আল্লাহ তাআলা কোরআনে ইসমাইল (আ.)-এর প্রশংসা করে বলেছেন, ‘সে তার পরিবারকে নামাজ ও জাকাতের নির্দেশ দিত এবং সে
ছিল আল্লাহরসন্তোষভাজন বান্দা।’ (সুরা : মারিয়াম, আয়াত : ৫৫)
আশাকরি নামাজ শিক্ষা ও প্রয়োজনীয় সূরা-দোয়া।শিরোনামের এই অ্যাপটি ব্যাবহার করে আপনারা প্রাত্যাহিক জীবনে অনেক উপকৃত হবেন এবং।অ্যাপটি ভাললাগলে অবশ্যই পজিটিভ রেটিং দিতে ভুলবেন না ,
এটি অন্য ইউজারদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।