যাদু এমন এক বস্তুকে বলা হয় যার উপকরণ নিতান্ত গোপন ও সূক্ষ্ণ হয়ে থাকে। আর যাদুকে যাদু নামে এজন্য অভিহিত করা হয় যে, এটা এমন সব গোপনীয় কাজের মাধ্যমে অর্জিত হয় যা দৃষ্টির আগোচরে থাকে। যাদুর মধ্যে মন্ত্র পাঠ, ঝাড়ফুঁক, বাণী উচ্চারণ, ঔষধপত্র ও ধূম্রজাল- এসব কিছুর সমাহার থাকে। যাদুর প্রকৃত অস্তিত্ব রয়েছে। কোন যাদু মনের উপর আছর করে এবং কোনটা দেহের উপর। ফলে মানুষ কখনো অসুস্থ হয়ে পড়ে, কখনো নিহতও হয় এবং এর দ্বারা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেও বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করা যায়। যাদুর এই আছর ও প্রতিক্রিয়া আল্লাহ তাআলার পার্থিব ও তাক্বদীরে নির্ধারিত হুকুম ও অনুমতি ক্রমেই হয়ে থাকে। আর এটা পুরোপুরি শয়তানী কাজ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে যাদু -বিদ্যা আয়ত্ব করতে হলে শিরকের মাধ্যমে এবং অপবিত্র ও দুরাত্মাদের পছন্দনীয় কাজের মাধ্যমে তাদের নৈকট্য লাভের আশ্রয় নিতে হয়।
এ উভয় ক্ষেত্রে গায়েবী এলেম ও অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে জানার দাবী করা হয়। যেমন ভবিষ্যতে পৃথিবীতে কি হবে এবং কি ফলাফল অর্জিত হবে, হারানো বস্তুর প্রাপ্তিস্থান কোথায় প্রভৃতি সম্পর্কে খবর দেয়া, যা তারা শয়তানদের মাধ্যমে জেনে থাকে। আর শয়তানরা চুরি করে শোনার মাধ্যমে আসমান থেকে এসব সংবাদ সংগ্রহ করে থাকে।
এটা এভাবে হয় যে, শয়তান ফিরিস্তাদের কিছু কথা চুরি করে শোনে এবং দৈবজ্ঞের কানে তা ঢেলে দেয়। অত:পর দৈবজ্ঞ এ কথার সাথে নিজের পক্ষ থেকে আরো শত মিথ্যা বানিয়ে তা পেশ করে। আর মানুষ আসমান থেকে শোনা সত্য কথাটির কারণে তার সকল মিথ্যাকে সত্য বলে মনে নেয়। অথচ শুধু আল্লাহরই গায়েব সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন। অতএব যদি কেউ দাবী করে যে, সে ভাগ্য গণনা ও দৈববিদ্যা বা অন্য কোন মাধ্যমে এই জ্ঞানে আল্লাহর সাথে শরীক অথবা কেউ এরকম দাবীদারকে সত্যবাদী মনে করে, তাহলে সে আল্লাহর জন্য যা খাস তাতে তাঁর শরীক স্থির করলো।