নবীর সুন্নাত হচ্ছে এক জীবন্ত আদর্শ। এর আবেদন কেয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এ আদর্শের বর্ণনা, এ আদর্শ সম্পর্কে গ্রন্থ রচনা আল্লাহর রাসূল (ছঃ) এর আবির্ভাব কাল থেকেই চলে আসছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। রাসূলুল্লাহ (ছঃ) এর আদর্শ মুসলমানদের জন্যে এক বাস্তব নমুনা ও ঘটনাবহুল কর্মসূচী। এর আলোকে মুসলমানদের কথা ও কাজ নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হবে এটাই স্বাভাবিক। আল্লাহ রব্বুল আলামীনের সাথে মানুষের সম্পর্ক, আত্মীয় স্বজন, ভাইবন্ধুদের সাথে মানুষের সম্পর্ক আল্লাহর রাসূল (ছঃ) এর আদর্শ অনুযায়ী হওয়া উচিত।
সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক এরশাদ করেন, 'নিশ্চয়ই প্রত্যেকের জন্য রয়েছে আল্লাহর রাসূলের মধ্যে উত্তম আদর্শ। যারা আল্লাহ পাকের রহমত আশা করে এবং আখেরাতের কল্যাণ কামনা করে তারা আল্লাহকে বেশী বেশী স্মরণ করে।'
হযরত আয়েশাকে (রাঃ) জিজ্ঞেস করা হয়েছিল রাসূলুল্লাহ (ছঃ) এর চরিত্র কেমন ছিল? তিনি বলেছিলেন, পবিত্র কোরআনই ছিল তাঁর চরিত্র।
সুতরাং যে ব্যক্তি দুনিয়া ও আখেরাতের যাবতীয় কাজে আল্লাহ পাকের পথের পথিক হতে চায় এবং দুনিয়া থেকে মুক্তি পেতে চায়, তার জন্য আল্লাহর রাসূলের অনুসরণের বিকল্প কোন পথ নেই। এ ধরনের মানুষকে যথেষ্ট ভেবে-চিন্তে বুঝে-শুনে অবিচল বিশ্বাসের সাথে আল্লাহর রাসূলের অনুসরণ করতে হবে। তাকে বুঝতে হবে যে, এটাই হচ্ছে পরওয়ারদেগারের সোজা পথ। আমাদের নেতা আমাদের পথ প্রদর্শক আল্লাহর রাসূল (ছঃ) জীবনের সকল দিক ও বিভাগে অনুসরণযোগ্য আদর্শ রেখে গেছেন। তাঁর আদর্শের মধ্যেই নেতা, কর্মী, শাসক শাসিত, পথ প্রদর্শক ও মোজাহেদদের জন্য দেহায়াতের আলো রয়েছে। প্রিয় নবীর আদর্শ মানুষের রাজনীতি, রাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, পারস্পরিক সম্পর্ক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, তথা প্রতিটি ক্ষেত্রেই সর্বোত্তম আদর্শ।
মুসলমানরা বর্তমানে রাসূলুল্লাহ (ছঃ) এর পথ থেকে দূরে সরে গিয়ে মূর্খতা ও অধঃপতনের অতল গভীরে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। তাদের সচেতন হওয়ার সময় এসেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসূহের পাঠ্যসূচীতে বিভিন্ন সমাবেশে আলোচনা অনুষ্ঠানে সীরাতুন্নবীকে সবকিছুর উর্ধ্বে রাখতে হবে। বুঝতে হবে যে, এটা কেবল চিন্তার খোরাকই নয় বরং এটাই হচ্ছে আল্লাহ পাকের কাছে ফিরে যাওয়ার পথ। এ আদর্শের মাঝেই রয়েছে মানুষের সংশোধন ও কল্যাণের উৎস। কেননা, আল্লাহর রাসূল (ছঃ) এর চরিত্র ও কাজই হচ্ছে আল্লাহ পাকের কিতাব কোরআনের বাস্তব রূপ। এ আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে মু'মিন বান্দা আল্লাহ রব্বুল আলামীনের শরীয়তের অনুসারী হতে পারে। মানব জীবনের সকল ক্ষেত্রে কোরআনকে দিক নির্দেশকরূপে গ্রহণ করতে পারে।