আখেরী চাহার শুম্বা
পারসী ভাষায় ইহার অর্থ “শেষ বুধবার”। ইহা নবী জীবনের শেষ বুধবার। দীর্ঘ দিন অসুখের পর এই দিন তিনি গোছল করিয়া-ছিলেন বলিয়া কথিত আছে, এবং বেশ কিছুটা সুস্থতা অনুভব করিয়াছিলেন বলিয়াও কথিত হইয়া আসিতেছে।
হাদিসে কেরতাসের ঘটনাটি রসুলাল্লাহর জীবনের শেষ বৃহস্পতিবারে ঘটিয়াছিল। আগের দিন বুধবারে তিনি অত্যন্ত বিমর্ষ হইয়া পড়েন। কারণ তিনি দেখিলেন যে, মদিনাবাসী অধিকাংশ উম্মত আলীর নেতৃত্ব অস্বীকার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছে। প্রায় দুই মাস তিন দিন আগে আল্লাহ ও তাঁহার রসুলের নির্দেশে গাদিরে ঘুম নামক স্থানে আলীর (আঃ) নিকট তাহাদের আনুষ্ঠানিক ভাবে গৃহিত আনুগত্য ভঙ্গ করিবার সিদ্ধান্ত তাহারা গ্রহণ করিয়াছে। ইহাই ছিল তাঁর বিমর্ষ হওয়ার একমাত্র কারণ।
সুতরাং এই দিনে মুসলমানদের উপর তিন লক্ষ বিশ হাজার বালা-মসিবত নাজেল হয়। ইহা হইতে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিম্নবর্ণিত পদ্ধতিতে গোছল করা ও নামাজ আদায় করার ব্যবস্থা দান করিয়াছেন হজরত ফরিদ উদ্দিন গঞ্জে শাকার। তিনি এই ব্যবস্থা খাজা গরীব নেওয়াজের নথি পত্র হইতে উদ্ধার করিয়াছেন বলিয়া জানাইয়াছেন। উহাতে ইহাও উল্লেখ ছিল যে, তিনি উহা তাঁহার মোর্শেদ ক্বেবলা হজরত খাজা ওসমান হারুনী (র) হইতে পাইয়াছেন। পার্শ্বে বর্ণিত সালাম ৭টি লিখিয়া (লালকালী দ্বারা) এক পাত্র পানিতে রাখিয়া ঐ পানি দ্বারা গোছল করিতে হইবে। তারপর দুই রাকাত নামাজ আদায়ের পদ্ধতি নিম্নরূপ বর্ণনা করিয়াছেন :Ñ
প্রথম রাকাতে সুরা ফাতেহার পর সূরা কাওসার ১৭ বার এবং এখলাস ১০ বার। দ্বিতীয় রাকাতে ফাতেহার পর সূরা ফালাক ৩ বার এবং সূরা নাস ৩ বার।
অথবাÑউক্ত সংখ্যা সুরা কাওসার ৭০ বার এবং এখলাস, ফালাক ও নাস প্রতিটি ৫ বার পড়িতে নির্দেশ দিয়াছেন।
নামাজ শেষে সেজদায় যাইয়া আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাহিতে হইবে যেন উক্ত বালা মসিবতের কিছুই আমাদের উপর চাপিয়া বসিতে না পারে। তারপর দিনটি কোন কামেল ব্যক্তির সহচার্যে অথবা মাজারে কাটানই উত্তম।
খাজা সাহেব অবশ্য উক্ত বালা মসিবত নাজেল হইবার কারণ উল্লেখ করেন নাই। লিখিত ইঙ্গিত রাখিয়া গিয়াছেন মাত্র।