মা মঙ্গলচন্ডী দেবী দুর্গার রূপভেদ এবং 'শক্তি' নামে পরিচিত। বিশ্বের মূল স্বরূপা প্রকৃতি দেবীর মূখ হতে মঙ্গলচন্ডী দেবী উৎপন্না হয়েছেন। চন্ডরূপ ধারণ করে দেবশত্রুদের বধ করেন বলে তাঁর নাম হয় চন্ডী এবং ভক্তের মঙ্গল করেন বলেই তিনি মঙ্গলচন্ডী। বহু নামে ও রূপে মা পূজিত হন।
মঙ্গলচন্ডী রূপে মা দ্বিভূজা, ত্রিনয়না, গৌরবর্ণা, বরাভয়স্তা এবং পদ্মাসনে উপবিষ্ট, বাহন সিংহ।
মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে চন্ডীমঙ্গলের কাহিনীতে মঙ্গলচন্ডীর মাহাত্মা গীত হয়েছে। এখানে মা অভয়া মঙ্গলচন্ডী নামে বর্ণিত।
পুরানের দেবী চণ্ডী অস্ত্রধারিনী, অসুর মর্দিনী। কিন্তু মঙ্গলচণ্ডী দেবীর যে পট ছবি আমরা দেখি তাতে তিনি দ্বিভুজা, হাতে পদ্ম পুস্প, পদ্মাসীনা। সমগ্র মাতৃত্বের রূপ দেবীর মধ্যে প্রস্ফুটিত।
চণ্ডীমঙ্গল কাব্য অনুসারে চন্ডীদেবীর আবির্ভাবের প্রথম পর্বে দেখি কালকেতু ও ফুল্লরার কথা। কালকেতু জাতিতে শবর ব্যাধ, তার পত্নী ফুল্লরা এক শবরী । কালকেতু বনে শিকার করে মাংস হাটে বিক্রি করে সংসার চালাতো। একদা দেবী চণ্ডী তাঁদের গৃহে ছদ্দবেশে এসে পরীক্ষা নেন। কালকেতু ও ফুল্লরাকে শেষে দশভুজা রূপে দর্শন দিয়ে তাঁদের গুজরাট প্রদেশের অধিপতি করেন।
চণ্ডীদেবীর কথা বৃহধর্ম পুরানে পাওয়া যায় ভবিষ্যপুরানে মঙ্গলচণ্ডী ব্রতের উল্লেখ আছে। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরান মতে ইনি কেবল স্ত্রীলোকের দ্বারা পূজিতা বলা হয়েছে।
মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে চন্ডীমঙ্গলের কাহিনীতে দুর্গা অর্থাৎ অরণ্যানী চন্ডীর মাহাত্ম্য গীত হয়েছে। এখানে তিনি অভয়া মঙ্গলচন্ডী নামে বর্ণিত। তাঁর বাহন গোধা বা গো-সাপ।
অতি প্রাচীন কাল থেকেই বাংলায় সংসারের মঙ্গল কামনায় মহিলা গন মঙ্গলচণ্ডীর পূজো করে থাকেন। প্রতি মঙ্গলবারে তাঁহার পুজা বিধেয়।